প্রাচীনকালে শাসকরা যেমন ছদ্মবেশে সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা ঘুরে দেখতেন। বর্তমানে এমনটি আর নেই। কাজের বাইরে কেউই এখন বাড়তি দায়িত্ব নিতে চায় না। তবে এর মধ্যেও কিছু মানুষ রয়েছেন যারা সাধারণ মানুষের
জন্য কাজ করতে চান। ভারতের পুণের পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ প্রকাশ এমনই একজন মানুষ। তিনি যেভাবে পুলিশের কাজ খতিয়ে দেখার চেষ্টা করলেন, তা এখনকার দিনে কেউ ভাবতেই পারে না।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮-এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, কাউকে কিছু না জানিয়ে সাধারন মানুষের
বেশে একের পর এক থানায় হাজির হন কৃষ্ণ প্রকাশ। খতিয়ে দেখতে চান থানায় সাধারণ মানুষ ঠিকঠাক পরিষেবা পাচ্ছেন কিনা। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের স্বার্থেই এমন সাজ।
জানা গেছে, একজন পাঠানের পোশাক পরে, মুখে নকল দাড়ি-গোঁফ লাগিয়ে একের পর এক থানায় হাজির হন কৃষ্ণ প্রকাশ। সঙ্গে নেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশ প্রেরণা খাটেকে। তাকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পুলিশের
কাছে পরিচয় দেন কমিশনার। তারা দুজনে একের পর এক থানায় হাজির হন। সেখানে নিজেদের অভিযোগ দায়ের করেন। তারা আসলে দেখতে গিয়েছিলেন, সাধারণ মানুষ থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার কেমন আচরণ করেন।
প্রতিটি থানায় তারা আলাদা অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পরপর দুটি পুলিশ স্টেশনে তাদের অভিযোগ শুনে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রস্তুত হন পুলিশের কর্মীরা। ওই দুই পুলিশ স্টেশনে কর্তব্যরত অফিসারদের তৎপরতা দেখে সন্তুষ্ট হন পুলিশ কমিশনার। তবে গোল বাঁধে অন্য একটি থানায়।
একটি থানায় গিয়ে কমিশনার অভিযোগ করেন, কোভিড আক্রান্ত রোগী নিয়ে যাওয়ার জন্য একজন অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার তাদের কাছ থেকে অনেক টাকা দাবি করছে। কিন্তু ওই থানার কর্তব্যরত অফিসার তার অভিযোগে সাড়া
দেননি। বরং সেই অফিসার তার অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন। ওই থানার পুলিশরা তাকে বলেন, স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে সবার আগে অভিযোগ জানাতে। এই ব্যাপারে কোনো সহায়তা তারা করতে পারবেন না বলে জানান।
এ ঘটনার পরপরই পুলিশ কমিশনার নিজের আসল পরিচয় দেন। এরইমধ্যে ওই থানার কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের কাছে জবাবদিহি চেয়েছে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ। কেন অভিযোগ নেয়া হলো না, তার সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে ওই থানার পুলিশ কমিশনারকে।